আমিরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ থেকে: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের চাঞ্চল্যকর মনির হোসেন মনি (১৯) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে আসে পানিতে ডুবে মৃত্যু। শাহজাদপুর থানা পুলিশও তদন্ত করে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হিসেবে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। পরে বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। পিবিআই তদন্ত করে দেখে এটা একটা হত্যাকাণ্ড।
এ ঘটনায় উপজেলার পোতাজিয়া এলাকার মৃত হাফিজের ছেলে আসামি আব্দুল কাদের (১৯) ও রূপপুর এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে মাহবুব হাসান রিমনকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। নিহত মনি একই এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআইয়ের সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর মনির হোসেন মনি বাড়ি থেকে হতে বের হন। পরবর্তীতে বাড়িতে ফিরে না আসলে পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। পরের দিন ১২ নভেম্বর ভোরে শাহজাদপুর থানার রুপপুর নতুন-পাড়া গ্রামে করতোয়া নদীতে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে ২১ নভেম্বর শাহজাদপুর থানায় একটি মামলা করেন। শাহজাদপুর থানা পুলিশ ভিকটিমের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও মামলাটির তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করলে বাদী বিজ্ঞ আদালতে নারাজির আবেদন করেন। বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে আদেশ দেন।
গোয়েন্দা ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামি আব্দুল কাদের এবং মাহবুব হাসান রিমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মনির হোসেন আসামি আব্দুল কাদের, রিমন এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুইজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। তারা প্রায়ই একসঙ্গে মাদক সেবন করতেন।
তিনি আরও বলেন, ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় আসামি রিমন, আব্দুলু কাদের, মনির এবং অজ্ঞাতনামা বন্ধুরা থানার ঘাট ব্রিজের পাশে নদীর ধারে একসঙ্গে বসে গাঁজা সেবন করে। গাঁজা সেবন করার সময় সকল আসামি ভিকটিমকে গাঁজার টাকা দিতে বললে ভিকটিম টাকা দিতে না পারায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আসামি আব্দুল কাদের, রিমন ও অন্য দুইজন বন্ধু মিলে মনিরের মুখে, বুকে ও মাথায় কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে শুরু করে। আসামিদের মারপিটে ভিকটিম মাটিতে পড়ে গিয়ে নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে সকল আসামি মিলে ভিকটিমকে নৌকায় তুলে মাঝ নদীতে নিয়ে গিয়ে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।